বাক্ ১০৭ : অ্যাডি অ্যাসিস : অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়



ইস্রায়েলের হিব্রু ভাষার কবি অ্যাডি অ্যাসিস-এর কবিতা
ভাষান্তর : অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়



অ্যাডি অ্যাসিস-এর জন্ম ১৯৬৭-তে, তেল আভিভে। পড়াশোনা করেছেন জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন শাস্ত্রে। ব্যঙ্গ আর ব্যক্তিগত যন্ত্রণা, দুই-ই ওঁর লেখার মূল গতি। এখনও অবধি প্রকাশিত কবিতার বই — ‘ফায়ার আর্মস’ (২০০৯) এবং ‘চাইল্ড’ (২০১৩)। এখানে ওঁর প্রথম বইটি থেকে কয়েকটি কবিতা বাঙলায় অনুবাদ করলাম।    


যিশু

যিশু যখন তাঁর দু বাহু দুপাশে ছড়িয়ে দিলেন
তিনি উদ্ভাবন করলেন প্রস্থ।
ক্রুশবিদ্ধকারী তখন তাঁর কানে ফিসফিস করে বলল :
‘ওড়ো দেখি।’


জেনেসিস

প্রথমে তিনি নিজের জন্য একজোড়া কান বানালেন
অথচ কিছুই শুনলেন না।
এরপর মুখ বানালেন,
কিছুই বললেন না।
একটা কলম তৈরি করে কানে গুঁজে রাখলেন
সারাদিন ধরে কালি শুধু কালি বমি করলেন
আর তারপর সেখানে সন্ধে হল।
তিনি ন্যাকড়া সৃষ্টি করলেন
সেই তলতলে নীল কালি মুছতে।
পারলেন না।
নীল কালি জমতে জমতে কালো হল, অন্ধকার।
সেখানে ফুটে উঠল তারা।


একটি কবিতা

শূন্য খাঁ খাঁ বাড়িতে একটানা বেজে যাওয়া একটা টেলিফোনের মতো লিখছি


আয়ু

ঈশ্বরকে ডেকেছি কিন্তু ঈশ্বর বলে তো
কিছু নেই। তবু ডেকেছি যখন নিশ্চয়ই
আছেন। আর যদি না-ই থাকবেন তাহলে
কাকে ডাকলাম? তারমানে ডেকেছি, ঈশ্বরকেই
ডেকেছি। তিনি ছিলেন, এক-সেকেন্ডের
এক ভগ্নাংশ মুহূর্তের জন্যে হলেও থাকবেনতিনি মরতে
পারেন না। যতক্ষণ আমি তাঁকে

ডাকছি।


এক অন্ধ কবি

দরজার ছ্যাঁদার সাথে সূর্যের তুলনা
শুধু কোনও অন্ধ কবিই পারে

পিচের ড্রামে খাগের কলম ডুবিয়ে
সে লিখছে :

প্রেয়সীর চোখ থেকে আজ
আগুন চুরি করব বলে স্থির করেছি

আর হেঁশেলের দরজার সামনে
সে আমার দিকে তাকাতেই
ডানা দুটো গলতে শুরু করল।

আবার আমি স্যালাড আর ওমলেট নিয়ে বসে পড়লাম।

5 comments:

  1. কবিতা ভাবনার বিস্তৃতি এক অসামান্য অনুভূতি রেখে গেল!!

    ReplyDelete
  2. আহা! জেনেসিস। অনন্য।
    অনুবাদ কী হিব্রু থেকে সরাসরি করা হয়েছে?

    ReplyDelete
  3. একটি কবিতা

    শূন্য খাঁ খাঁ বাড়িতে একটানা বেজে যাওয়া একটা টেলিফোনের মতো লিখছি


    ইসস।

    ReplyDelete
  4. "ওড়‌ো দেখি" থেকে 'ডানা দুট‌ো গলত‌ে শুরু করল', মুগ্ধতা।

    ReplyDelete
  5. "ওড়‌ো দেখি" থেকে 'ডানা দুট‌ো গলত‌ে শুরু করল', মুগ্ধতা।

    ReplyDelete