বাক্ ১০৭ : শান্তনু বেজ



কিছু বিষন্ন ফুঁ ও পরবর্তী মোমবাতি

নিম্নলিখিত ঠোঁটগুলি পায়রার মতো রিক্ত বকবকম 

)
...ঠোঁট থেকে একজোড়া একজোট পা ঠিকরে আসে। শব্দ সেজে আওয়াজ করে উৎসব বেশে। কথা শেষ হয়, নুপুর শুরু হয়, জেগে থাকে কথার অল্প অল্প 'যেন'। তারপর, এরপর। পর পর। ঠিক দেখা যায় ঠোঁটের ভিতর পায়ের ধূলো এসেছে...

)
...আমার ঠোঁটের কথা। আসে সাম্প্রদায়িক হরফে। তোমার চোখের আলোয় আমার ঘর ঠোঁট সাজাই। ঠোঁটের রঙ সাজালেই আমি তোমার দেশবাসী। ওদিকে আমার শত্রুর ভ্রু'ক্ষেপ বাড়ে। মনে করে ওরা, আমি যেন এইমাত্র ঘুড়ি। পরক্ষণেই লাটাই। ভয় পায়,  উড়ে গিয়ে যদি রঙ শকুন খসিয়ে আসি...


)
...আমার ঠোঁটের ভিতরে বাইরে নিয়ে এখন বলছি.....এক পশলা বিপ্লব রঙ। এক পশলা কবি রঙ। ভিতর ও বাহিরে। গায়ে মাখলেই হয় আমি সত্তর দশক অথবা বিপ্'দশক। হায়, ঠোঁটের সেইসব মুগ্ধ ফুঁ!  এখন অস্পষ্ট আমি । এক শান্তনু বেজ। অন্য ঠোঁট।  বিস্তীর্ণ বয়স,  খোলা মাঠ, পাতলা বীর্য নিয়ে।  এই গাঢ় ভারতবর্ষের কাছে উবু হয়ে আছি। আমি এক নিবিড় দ্রোহপর্বত...

)
...তোমার আঙুলের রক্তের। ইশারায় একটা করে মোমবাতি নৌকা রোজ ডুবে যায়। সেখানে নদী সরে যায়, চারপাশে বন জন্মায়। তাকে ঘিরে বেড়ে ওঠে অরণ্য। ধীরে ধীরে জড়ো হয় তোমার সমর্থক। সমর্থক, যারা নদীতে  সভ্যতা চেয়েছিল, তারা এখনও দেশলাই চায়। শুধু আমি চেয়েছিলাম নৌকা, অরণ্য, বন, তোমার আঙুল, আমার আঘাত, আমাদের ফুঁ, মানুর ঠোঁট, দুখী দাসীর ছেলের ঘুড়ি  যেন কোনদিন কোন ক্লান্ত মোমবাতির কাছে গিয়ে নীরবতা পালন না করে...

)
তোমার ঠোঁটের জয় হোক
তোমার ঠোঁটের নুনের বৃদ্ধি হোক
তোমার নুনের জোঁকের ক্ষয় হোক
তোমার জোঁকের রক্তের সমর হোক
তোমার রক্তের প্রাণের ঢেউ হোক
তোমার প্রাণের বিপ্লবের সূচনা হোক
তোমার বিপ্লবের  মোমবাতি আলো হোক
তোমার মোমবাতি  ফুঁ'এর জয় হোক
আয় ফিরে আয় সেইসব মুগ্ধ ফুঁ



(ঋণ স্বীকারঃ অনুপম মুখোপাধ্যায় ব্যবহৃত শব্দচ্ছেদের চেতনাবোধ নিঃসৃত বোধোদয়)

                                    (চিত্রঋণ : Wassily Kandinsky)

24 comments:

  1. বেশ ভালো। অন্যরকম স্বাদ। তোমার লেখা কি একটু বদলাচ্ছে শান্তনু? আমি সেইরকম আভাস পাচ্ছি আমার বোধে। তবে ভালো লাগছে এই বদল।

    ReplyDelete
  2. শান্তনুদার লেখা আমার এখনও অবধি পড়া সবচেয়ে প্রিয় কবিতা।

    ReplyDelete
    Replies
    1. সেরা বলে একটা শুধু ঝড় হতে পারে, আর কিছু নয়

      Delete
  3. চাবূক লেখা সব। ভালো না লেগে ঊপায় নেই।

    ReplyDelete
  4. bhalO chinta ...agamite aaro notun kichu pabo

    ReplyDelete

  5. চ) কাটাকুটি দেখলেই অনুপম মুখোপাধ্যায় এর কথা বয়ে আসে । পড়লেই বোঝা যাচ্ছে কবিতার প্রতি নতুনত্ব করার গবেষনা চলছে
    ....👍...👌...💐....👍...👌...💐

    ReplyDelete
  6. excellent hoyeche....gho,, ebong go bhalo laglo..........@avishek ghsoh

    ReplyDelete
  7. সেইসব মুগ্ধ ফুঁ ফিরে আসছে দেখো শান্তনু দা

    ReplyDelete
  8. ভালো লাগলো……

    ReplyDelete
  9. সম্পূর্ণ ভিন্ন স্বাদের কবিতা। পুনরাধুনিক ভাবনায় এগুলি রচিত হলেও এদের একটা নিজস্ব আবেদন আছে। ভালো লাগছে এই ভেবে যে অনুপমের কাজকে ভবিষ্যতের দিকে তুমি নিয়ে গেলে শান্তনু। তোমারও একটা স্বাক্ষর তৈরী হয়েছে।

    ReplyDelete
  10. মদ ও জুয়ার চেয়ে ঢের বেশি নেশা হয় মন ছুঁয়ে গেলে। হলও তাই

    ReplyDelete
  11. গ বেশ। ঘ আর খ দারুণ লাগল

    ReplyDelete
  12. জয় হোক, শান্তনু! তোমার কবিতা ঝাড়ে বংশে বৃদ্ধি হোক।

    ReplyDelete
  13. অনুপমের পুনরাধুনিক আমায় টানে।এই লেখার বিন্যাস ওকেই স্মরনে আনছে।খুব ভালো।

    ReplyDelete
  14. অনুপমদা যা শুরু করেছিলেন। তুমি তার একটা শাখায় নির্মান করছ। বেশ ভাল।
    যদি পুনরাধুনিকের ছোঁয়া না থাকত, তাহলেও ভালই... তবে ছোঁয়া পেয়ে একটা অন্য মাত্রা পেয়েছে।

    ReplyDelete
  15. মনের অন্দর ছুঁয়ে গেলো কবি ,,,,,,,

    ReplyDelete
  16. মনের অন্দর ছুঁয়ে গেলো কবি ,,,,,,,

    ReplyDelete